Nayan | WritersCafe.org

Tuesday, November 12, 2019

Sei Din - সেই দিন

সেই দিন! - কী ছিল সেই দিন?
যে হঠাৎই দেখি লোকের মুখে
পুজোর ঢাক ঢোল পেটার আনন্দ,
মনের দেয়ালে টেরাকোটার মিষ্টি হাসি,
আর নিশপিশ করা হাতগুলি যেন
বুক উজাড় করে দিতে চায় উপহারে!

কেন, সেই দিনই কেন?
যে হঠাৎই উচ্ছ্বাস ঝাঁপিয়ে পড়ে
সংবাদের কন্ঠে ও কলমে,
অনেকদিন দেখা হয়নি সাথে বা 
কণ্ঠ শুনিনি যার, সেও জেগে ওঠে,
পৃথিবীকে আপন করে নেবার এত বড়
প্রতীক ও সুযোগ, দেখি চোখের সামনে!

সেই দিনটির মাঝ দিয়ে, ভাবি, যেতে যেতে -
সেকি শুধু আমার জন্য, নাকি
সেই দিনটিরও ছিল কোনও মাহাত্ম্য?
অনেকেই তো আসে, অনেকেই চলে যায় -
শুধু একদিন একজনকেই নিয়ে
এত মাতামাতি কেন হয়?
সেই দিনটি কেন এত মনে রয়ে যায়?

সেই দিনটিই যে ডাকলো কাছে, বলল ওরে! -
"বুঝতে পারা জীবনের" বাইরেও যে জীবন আছে!
চাইলে শুধু একবার তাকা তো নয়ন মেলে,
তোর সামনের বুকভরা জীবন্ত বন্ধুটাকে।
আর তক্ষুনি! সীমার মাঝে অসীমকে ছোঁয়ার 
ঝলক দেখি যেন হাসির মুখের চোখে -
যেন জীবনের মানে জীবনই দেয় দেখিয়ে!
 
জানতে পারা যে জানার আছে এত কিছু -
বুঝলাম তবে শেষে - এই যে শ্বাস নিচ্ছি,
বুঝতে পারছি প্রাণের স্পন্দন, 
হৃদয়ের রাগ - রাগিনী, উপলব্ধির দোরগোড়ায় 
পারছি হাঁটতে, নিজের পায়ে!
জানি, হবে শেষ সেই শুরুরও, ক্ষতি নেই!
সেই শুরু আর শেষের মাঝে বাঁচাটাই সব,
আর সেই উপহারটি দিয়েছে, ওই সেই দিন!

তাই দূরে পিছনে ফেলে আসা 
সেই দিনটার মনে রাখাকে আবার
ফিরিয়ে আনি, অস্বস্তির ভাবনাকে
হালকা করে দিই মিলিয়ে যেতে, আর 
সকলের কাছে খুলে আমন্ত্রণের দরজা,
পাতি কান প্রকৃতির শব্দের দিকে, 
শুরুর স্রোতে ভাসিয়ে নিজেকে যেন
বেঁচে উঠি আরও আরও আরও!

আগুনের জন্য চাই একটি ফুলকি ই -
সেই দিনটি যেন তারই যোগান দিয়ে গেল!
জীবনের মাঝে নিজেকে মেলে দিয়ে, 
এবার দুর্বার দিগন্তকে জড়িয়ে ধরতে 
চায় মন! ভেঙে টুকরো করে যেন 
বিলিয়ে দিতে পারি, আবার জুড়ে 
তৈরি করতে পারি, যেভাবে যখনই 
যেখানেই হোক প্রয়োজন - 
এক তীব্র জীবনের স্বাদে, 
নিজেকে উজাড় করে - 
এক নতুন আমিতে!


-- নয়ন
সোম, ১১ই নেম্বরের । মঙ্গল, ১২ ই নভম্বর, ২০১৯
ঈশা যোগ কেন্দ্র, কোয়েম্বাটুর

Monday, November 11, 2019

Nijer Thekeo Boro Ek Obhiggota নিজের থেকেও বড় এক অভিজ্ঞতা

নিজের থেকেও বড় এক অভিজ্ঞতা

সময়ের মাঠের সেই বিশাল চত্বরে, 
একসময় যা লাগতো অন্তহীন, কঠিন, 
নিজেকে তৈরির যখন চলছিল কাজ,
মাথাতেও আসেনি কিন্তু কখনও,
সত্যিই কি পারবো, কেমন করে হবে সেটা,
যখন শেষ - মেষ দাঁড়াতে পারবো!


বোধকে আমার করেছিল সীমিত
আমার দৃষ্টির দুর্বলতা, অনুভূতিকে আমার
রেখেছিল রুখে বন্ধ হৃদয়ের দরজা।
তাই থেমে গেলাম, বাকরুদ্ধ হয়ে,
যখন প্রথম পা বাড়ালাম গুটির বাইরে -
কী বিশাল, কী অসীম পুরো জিনিস টা!


সেকেন্ড মেলালো মিনিটের মাঝে,
মিনিট হারালো ঘনটায়, সময়
মেলে ধরলো খুলে নিজেকে
আমার অবাক চোখের পর্দায়!
অপার এসবকিছু লাগছিল আমার,
কাঁপছিলাম সংশয়ে - পারবো কি আমি!
আর তক্ষুনি একি দেখি চোখের সামনে -
আপনা থেকেই ঘটলো জাদু!


শুরুতেই হল ভুল, মনে যে ভয় -
যেন কৃপা থেকে দূরে না যাই সরে!
উফ, এত বাধ্য করে, 
বার বার মনকে দেয় নাড়িয়ে কেন?
চিন্তিত চিত্তে তাকাই বাইরের দিকে,
তারপর অন্তরের মাঝে, আর
শেষে ডাকি সদগুরুকে!


চেষ্টা করি আরও জোর দিয়ে,
কিছুতেই হয়না যে কিছুই!
কিন্তু যে মুহূর্তে দিলাম নিজেকে ছেড়ে,
নিলাম শ্বাস একটা আলতো করে,
তক্ষুনি যে হয়ে গেল, সত্যি হল!
শব্দগুলো শুনেছি এতবার, ভেবেছি সবই জানি!
এই প্রথম যেন আঁছরে পড়ল এমন করে!


যতক্ষণ ছিলাম আমি, তা যে ছিল না!
যেই দাঁড়ালাম সরে, পুরো বেগে নেমে এসে
ঘটল সে কী জোরে! কী অবিশ্বাস্য তা
মেলে দিল নিজেকে, নিজেই চললো হয়ে!
আর, নিজের বোকামি জেনে রইলাম দাঁড়িয়ে,
কী অবাধ, পবিত্র, দুর্বার গেল ছুঁয়ে,
মুসলধারের মতো ভিজিয়ে দিয়ে!


"পারবো না" - এর ভীতি থেকে বেরিয়ে,
তাঁর উপস্থিতিতে পুরোপুরি ভিজে যাওয়া!
এক্কেবারে অন্য কিছু আমাতে দেখলাম,
তখনই বুঝলাম, এ তো আমি নই,
এ তো আমার করাও কিছু নয় -
কিছুই যেন আমি পারি না করতে,
পারি শুধু কৃপার কোলে শিথিল হয়ে যেতে!


যখন সে জাদুর কবিতার এলো শেষ,
পা বাড়াতেই যেন থমকে গেলাম, পরম মুগ্ধ!
অনুভূতির রসে সিক্ত শরীর আমার,
যেন লাগলো কাঁপতে, চোখের জলে
যেন নয়নদুটি আমার হয়ে এলো বন্ধ,
আর কী ই বা চাইতে পারি আমি?
কেঁদে উঠলাম কাঁপা গলায়, 
নেমে এলো, কী জোরালো বন্যাসম -
তাঁতে মিলিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে!


-- নয়ণ
সোম, ১১ই নেম্বরের ২০১৯ (আমারই লেখা ইংরেজি মূল কবিতা থেকে বাংলাতে ভাষান্তর)
ঈশা যোগ কেন্দ্র, কোয়েম্বাটোর

ইংরেজি মূল কবিতাটি এখানে পড়তে পারেন: http://musical-poet.blogspot.com/2019/10/an-overwhelming-experience.html


"কৃপা হি কেবলম"