Nayan | WritersCafe.org

Wednesday, November 19, 2025

সাঁইত্রিশের ঘরে (Saitirisher Ghore)


সাঁইত্রিশ বছর আগে -
এই দিন, এই ক্ষণ -
জন্মেছিল কে যেন
এক অমুল্য ধন।

নিয়ে ভীষণ ভার,
ভুয়েঁ এসে এবার,
পিতার চিন্তার সার,
হয়েছিল কার অভিসার?

সময়ের বহু আগে,
সে যে সময়েরও পার,
ভুস্বর্গে নিজ আধার,
সে খোঁজে দ্বার দ্বার!

স্বপ্নের নদী তীরে,
আটক তার তরণী ধীরে,
বইছে চোখের হিরে,
পরিপূর্ণ সে হবে কী রে?

শব্দ ফোটারও আগে,
দেবী তার নিত্য জাগে;
তাই জন্মসুত্রের অনুরাগে,
হয়েছে সে মুখরিত সেবা ও ত্যাগে!

সময় ঘোরে বার বার,
খুব তার ফেরবদলের ধার,
তাই সাম্যে রাখতে নিজ ভার,
সে অনবরত প্রচেষ্টায় জোরদার!

আপনের পর-এ আর
পর-এর আপনে আগমন,
যথার্থ জগতের অনুকম্পার
আশায় ক্ষত-বিক্ষত তার মন!

শিক্ষিত সুন্দর নিজ নিকেতনে,
মুরলিধরকে ডেকে ডেকে মনে,
সুযোগহীন সে আপন প্রাণে,
জোনাকিকে সোঁপে দিল জীবনে!

হাতে গড়া তাঁর কন্যা-সন্তান,
পরের ধাপে তুলে দিয়েছিলেন বলিদান,
বহু কষ্টে মেয়েটি পেল ত্রাণ,
শেষে হলো রক্ষে দানের মান!

আশাতীত অপরাজিত তার মন,
সব হারিয়ে আসে তার ক্রন্দন,
কিন্তু পরম পূজ্য পবিত্র সে ধন,
দেখা দেয় তার অতীতের স্পন্দন!

ধীরে ধীরে চাঁদের খেলা,
ধরণীতে ধরলো মেলা,
অনেক ঝড়ে সে দুলে দোলা,
শেষে মেটে তার বুকের জ্বালা!

বহু প্রাচীন, সে নয় কিছুতে ক্ষীণ,
জেনে যাক, সে হোক স্বাধীন,
আর না হোক সে সঙ্গীবিহীন,
অন্তরের শক্তিতে আর নয় মিনমিন!

কাটুক জরা, মিটুক খরা,
ভালোবাসা যে তার বুকে ভরা,
তার কর্ম দিয়ে আপন করা,
এবার অভয় দিয়েছে ধরা!

সত্যি কথার মানে,
তার বাজলো এবার কানে,
সে এখন নিজেকে বুঝতে জানে,
ঠাকুরের কৃপায় বন্ধুও এবার জানে!

তাই আশা জীবনকে খোঁজে,
আর জীবন আশায় সাজে,
ধীরে ধীরে পথ চলার মাঝে,
সুরের আলো বীণায় বাজে!

-- ভাস্কর ঘোষ 
বুধ, 19 নভেম্বর 2025
সকল 7টা, পাটনা

(ছবিটি perplexity AI দিয়ে তৈরি)

Monday, November 17, 2025

আসল চাওয়া (Real Wish)



যেখানে কেউ নেই আশেপাশে,
কাঁটা ছেঁড়া, টানা হেঁচড়া না করেই
শান্তিতে যেতে দেয় আমাকে,
এমনই নিরিবিলিতে যেন
মৃত্যু বরণ করতে পারি আমি,
প্রকৃতির মাঝে, যেখানে
ধুলি ধূসর মাটির গন্ধে গন্ধে,
বাতাস হালকা হাসিতে হাঁসে,
আর তাতেই সবুজ ধানের শীষ
আর হলুদ সর্ষে ফুলের দোলা
ছুঁয়ে যায় কাদা মাটি মাখা
স্টেশনে আটক রেলগাড়ির খাঁচার
ভিতর বসে থাকা মনের খেলাঘরের
সেই ছোট্ট অচিন পাখিটিকে!

যদি বেদনা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ত,
আর কান্না নীল সাগরের ঢেউ হতো,
তাহলে তো বুকের ভিতরটায় আর
এতোটা ব্যথা হতো না, এতো চাপ হতো না।
যদি মনের কথা শোনাবার জন্য
মুখে বাণী হতো, আর শুনবার জন্য
ভালোবাসা আর ধর্যের কান হতো,
তাহলে তো মানুষ বন্ধু পেতো।
যদি এতো টানটান পৃথিবীতে
একটু বইতো পাগলা হাওয়া,
একটু ভয় কম হতো আর
একটু লয় বেশি হতো জীবনে,
তাহলে দেবতা আর দেউলেই থাকতো না,
কুঁড়েঘরেও তাঁকে জীবন্ত পেতে!

সময়ের চারদেয়ারিতে বসে বসে
হয়ত ভুলেই গেছি যে একদিন এমন আসবে
যেদিন এ দেয়াল আর দেয়াল থাকবে না!
যেদিন সিনেমার মতো ঝিলমিল করে ওঠা,
ঊষার আলোয় আলোকিত, রঙে রঙিন, 
আর স্বপ্নের দরজা এতেও দেখা দেবে।
সেদিন তো আর বসে থাকলে চলবে না!
সেদিন স্বয়ং যেন ডাক দেবেন ঠাকুর,
যদি তৈরি না থাকি, যদি হাতছাড়া
হয়ে যায় তাঁকে দেখার শেষ সুযোগ!
তাহলে যে জীবনটাই ফসকে যাবে, বলো?
আর কি তখন আফসোস মিটবে কখনও?
তাই যেন আজ বইছে চোখের জল -
সকল খেলার মাঝে কবে পাবো (তোমাকে) সম্বল?

-- ভাস্কর জ্যোতি ঘোষ 
রবি, 17 নভেম্বর 2025
সন্ধ্যে 7টা, পাটনা

(ছবিটি perplexity AI এর মাধ্যমে তৈরি)

Sunday, November 9, 2025

জন্মদিনের দোলনায় (Jonmodiner Dolnaye)


জন্মদিনের দোলনায়
তুমি কি দুললে?
দোলার সময় পাশে,
কাউকে কি রাখলে?

যাকে তুমি রাখলে,
তাকে কি তুমিই ডাকলে?
নাকি আগেই সঙ্গে,
সে ছিলই তোমার অঙ্গে?

আপন করার উঠানে,
নাকি ঝগড়ার দালানে,
কোন গভীর ক্ষণে,
সে বাজল তোমার মনে?

সাগরের টানে,
জানোকি তার মানে?
তবে একলা মেঝেতে
বসে কেন সেজে সে?

কোন দুয়ার আগলে,
তুমি সারা রাত জাগলে?
যেন তোমারই প্রাণ সে,
হারিয়ে পাওয়া দান সে!

অচেতন নিমেষে,
যদি মনে ভুল বসেছে,
শুধরে নিও পলকে,
থেকোনা আর বিলেতে!

সে যে বিচারশূন্যে,
ভালোবাসার তুঙ্গে,
কখনোই মেলে না,
ছক কৌশল খাটে না!

যতবার হারবে,
মনে ভুল ভাঙবে,
নতুন করে বাঁচবে,
যদি একসাথে চলবে!

একলা চলে যে,
বড় কথা বলে সে,
তুমি ফিরেছ বাড়িতে,
থেকো না আর আড়িতে!

ছিল কোনও কারণে,
তোমার জীবন বরণে,
তাই আজ দোকা,
তুমি নওকো আর একা!

সময়ের আগে,
ভাগ্য কি জাগে?
তবু কত রঙ নষ্ট,
এত বৃথা কষ্ট!

ক্ষমা ও স্মরণে,
ত্যাগ ও তারণে,
মুছে যাক গ্লানি,
মুক্ত হোক প্রাণী!

ইচ্ছেগুলোর প্রাপ্তি,
যেন আনুক তৃপ্তি,
স্বচ্ছ সুন্দর সৃষ্টি,
আর ঈশ্বরের দৃষ্টি!

-- ভাস্কর ঘোষ
রবি, 9 নভেম্বর 2025
বিকেল 5:10, পাটনা

(ছবিটি পারপ্লেক্সিটি থেকে তৈরি)